পারভেজ হত্যা: বৈষম্যবিরোধীর পদধারী নেতা গ্রেপ্তার
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
২২-০৪-২০২৫ ০৮:৪৪:২৭ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২২-০৪-২০২৫ ০৮:৪৪:২৭ অপরাহ্ন
হৃদয় মিয়াজি। ছবি সংগৃহীত
রাজধানীর বনানীর প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নাম হৃদয় মিয়াজি (২৩)। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানার যুগ্ম সদস্য সচিব।
সোমবার (২১ এপ্রিল) রাতে উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের মনাইরকান্দি গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি পারভেজ হত্যায় এজাহারভুক্ত পাঁচ নম্বর আসামি।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) এ তথ্য জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) এ কেএম মঈন উদ্দিন। তিনি জানান, বিকেল সাড়ে পাঁচটার পর র্যাব বনানী থানায় হৃদয় মিয়াজিকে হস্তান্তর করেছে।
এর আগে গত সোমবার (২১ এপ্রিল) ভোররাত পর্যন্ত রাজধানীর মহাখালী ওয়ারলেস গেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে পারভেজ হত্যায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে বনানী থানা পুলিশ। তারা হলেন- খুলনা জেলার মো. মাহবুবুর রহমানের ছেলে মো. আল কামাল শেখ ওরফে কামাল (১৯), ময়মনসিংহ জেলার মো. লাল মিয়ার ছেলে আলভী হোসেন জুনায়েদ (১৯) এবং জামালপুর জেলার সুলাইমান শেখের ছেলে আল আমিন সানি (১৯)।
তবে এদের কেউ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন, মামলার এজাহারেও তাদের নাম নেই। সোমবার (২১ এপ্রিল) এ তিন আসামির ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। তারা এখন পুলিশি রিমান্ডে।
এর আগে রোববার (২০ এপ্রিল) রাতে এ নিয়ে রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ণ টাওয়ারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন হয়। এতে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা পারভেজ হত্যায় সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতার দাবিকে অস্বীকার করে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে ছাত্রদল পরিকল্পিত বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা শুরু করেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে সাধারণ ছাত্রদের ন্যায্য দাবি ও গণঅভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্মকে কলঙ্কিত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে ছাত্রদল।
তার আগে একই দিন দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম অভিযোগ করেন, পারভেজকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা জড়িত।
পুলিশ ও মামলার এজাহারের তথ্যমতে, শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে বনানীতে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রীকে নিয়ে হাসাহাসির জেরে পারভেজের সঙ্গে প্রাইম এশিয়ার ইংরেজি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীর বাকবিতণ্ডা হয়। পরে বিষয়টি মীমাংসা হলেও ক্যাম্পাসের বাইরে ৩০-৪০ জন যুবক পারভেজকে ঘিরে ধরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের চাচাত ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে ৮ জনকে আসামি করে বনানী থানায় মামলা করেন। মামলার আসামিদের মধ্যে কয়েকজন প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী। বাকিরা বহিরাগত।
মামলার আসামিরা হলেন- মেহরাজ ইসলাম (২০), আবুজর গিফারী পিয়াস (২০), মাহাথির হাসান (২০), সোবহান নিয়াজ তুষার (২৪), হৃদয় মিয়াজি (২৩), রিফাত (২১), আলী (২১) ও ফাহিম (২২)। এছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদের মধ্যে এজাহারে সোবহান নিয়াজ তুষারের পরিচয় দেয়া হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানার যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে। হৃদয় মিয়াজির পরিচয় দেয়া হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একই ইউনিটের যুগ্ম সদস্য সচিব হিসেবে।
বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স